Description
ভেনেজুয়েলার ডায়েরি
দেবাশিস দাশগুপ্ত
“আমরা যেখানে আছি সেটা গুয়ানা শহর, বলিভার প্রদেশের অন্তর্গত। এই প্রদেশের রাজধানীর নামও বলিভার। এখান থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে। গাড়িতে মেরে কেটে ১ ঘন্টা। এখানে সর্বত্রই বলিভারের নাম শোনা যাবে। এয়ারপোের্ট থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটি সবকিছুই সিমন বলিভারের নামে। আমাদের দেশে যেমন গান্ধী, রাশিয়ায় যেমন লেনিন তেমনি এখানে সিমন বলিভার। এখানকার কারেন্সির নামও বলিভার আর তাতে বলিভারের ছবি মুদ্রিত আছে। সিমন বলিভার সফলভাবে স্পেনের রাজার ঔপনিবেশিক শাসন থেকে কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পানামা, পেরু, বলিভিয়া ও ভেনেজুয়েলাকে মুক্ত করেছিলেন। তাঁর মুক্তিবাহিনীর সপক্ষে সম্মতি অর্জন এবং পূর্ণ স্বাধীনতার ধারণাকে সমর্থন করার জন্য জনমতের জোয়ার তাঁর দিকে ঘুরিয়ে দিতে তিনি সম্পূর্ণভাবে সফল হয়েছিলেন। স্প্যানিশ সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করার জন্য অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের জনগণকে নিয়ে তৈরি করেছিলেন তাঁর মিশ্র সেনাবাহিনী। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি নিয়ে মুক্তির লক্ষ্যে তাদের একত্রিত করে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। একটা সংবিধানও তিনি রচনা করেন যা গণতন্ত্রের ধারণার বিকাশ ঘটায়। যদিও বলিভার একজন স্বৈরশাসকের মতোই কাজ করেছিলেন, তবে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের চেয়ে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রই ছিল তাঁর লক্ষ্য। তাঁর চিন্তাপ্রসূত গণতন্ত্রের এই বিবর্তন দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে জাতীয় পরিচয়ের অনুভূতির সৃষ্টি করেছিল। ‘একটা প্রজাতন্ত্রী সরকার- এটাই ভেনেজুয়েলার লক্ষ্য হওয়া উচিত। এর নীতিগুলি হওয়া উচিত জনগণের সার্বভৌমত্ব, ক্ষমতার বিভাজন, নাগরিক স্বাধীনতা, দাসত্বের অবসান এবং রাজতন্ত্র ও বিশেষ সুযোগ-সুবিধার বিলুপ্তি। নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের বিভিন্ন শ্রেণী, রাজনৈতিক মতামত এবং রাজনৈতিক প্রথা নির্বিশেষে দরকার সমতা, দরকার সম্মিলিতভাবে মানবিক অধিকার অর্জন’- এটাই ছিল বলিভারের স্বপ্ন।”
—-ভেনেজুয়েলার ডায়েরি : দেবাশিস দাশগুপ্ত।
ভেনেজুয়েলার এমনই অনেক অজানা ইতিহাস, রাজনীতি লুকিয়ে রয়েছে এই বইয়ের পাতায় পাতায়।
Reviews
There are no reviews yet.